ঢাকা বুধবার, মার্চ ২৯, ২০২৩

Popular bangla online news portal

এক দশকে দারিদ্রের হার নেমেছে ২০ শতাংশে : প্রধানমন্ত্রী


সংলাপ প্রতিবেদক
৬:৫৩ - সোমবার, মার্চ ৬, ২০২৩
এক দশকে দারিদ্রের হার নেমেছে ২০ শতাংশে : প্রধানমন্ত্রী

‘সম্ভাবনা থেকে সম্মৃদ্ধির পথে’ প্রতিপাদ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হলো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলন। পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী পর্বে রবিবার (৫ মার্চ) যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথযাত্রা বক্তব্যে তুলে ধরেন সরকার প্রধান।

তিনি জানান, গত এক দশকে দারিদ্রের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। এছাড়াও বেড়েছে গড় আয়ু-মাথাপিছু আয় ও স্বাক্ষরণার হার। দোহা কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আশার আরেকটি আশ্বাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এলডিসিতে বাস্তব কাঠামোগত রূপান্তরের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এলডিসিতে উত্তরণে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য কিছু প্রণোদনা থাকা উচিত। তাদের একটি বর্ধিত সময়ের জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সহায়তা ভোগ করা উচিত। তাদের উন্নত বিনিয়োগ এবং উৎপাদনশীল সক্ষমতা কীভাবে তৈরি করা যায় তা জানতে হবে।

তিনি বলেন, তাদের জন্য কিছু উদ্ভাবনী ও ক্রান্তিকালীন অর্থায়ন ব্যবস্থা থাকতে পারে। তবে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈশ্বিক বাণিজ্যে তাদের অংশ দ্বিগুণ করার জন্য টেকসই সহায়তা প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলোর এলডিসির জন্য ওডিএ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণ টেকসই করার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যম রয়েছে। এলডিসিগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নকে নমনীয় এবং অনুমানযোগ্য করা উচিত। এলডিসিগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তর বাস্তব ও অর্থপূর্ণ হওয়া দরকার। আমাদের অভিবাসী শ্রমিকদের তাদের অধিকার এবং মঙ্গলের জন্য সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা এলডিসিতে ২২৬ মিলিয়ন যুবকদের ব্যর্থ করতে পারি না।

বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এলডিসি অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে, জলবায়ু সংকট এবং কিছু স্বল্পোন্নত দেশে দীর্ঘকাল ধরে টানা সংঘাত। বাংলাদেশের গল্পের বেশিরভাগ অংশই আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য আলোচনা করেছিলাম এবং সহযোগিতার জন্য আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেছি। বেশিরভাগ উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতি থেকে আমরা যে শুল্ক এবং কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছি তা আমাদের বেসরকারি খাতকে একটি দৃঢ় উৎপাদন ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্রিপস চুক্তির অধীনে প্রদত্ত পেটেন্ট মওকুফ সুবিধা স্থানীয়ভাবে আমাদের ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করার সুযোগ করে দিয়েছে। অপর ডব্লিউটিও চুক্তির অধীনে রেয়াৎগুলো আমাদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্ষুধা ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছি- তা আমাদের সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলা করছে। করোনার পর যুদ্ধ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত হিসেবে এসেছে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিয়ে সংকটে আছে বাংলাদেশ। এসব সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তার পাশাপাশি আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, দান নয়; চাওয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন।

এক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলোও তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশ্ব সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট দেশ গড়ে তোলাই এখন লক্ষ্য। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। ১০ বছর পর পর এই সম্মেলন হওয়ায় এবারেই বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ।