বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ভিত্তিক সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের গবাদিয়া বুড়াবুড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের নির্বাচন ২০২৩ এ ভোট গ্রহনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ভোটাররা।
ভুক্তভোগী ভোটার মো. নাছরুল্যাহ মিয়া টিপু, কাজী সাইফুল ইসলাম, মো. ইসমাঈল ও মো. মজিব উল্যাহ বলেন, গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের ভুলুয়া কিন্ডার গাটেনে গবাদিয়া বুড়াবুড়ি খাল ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের নির্বাচন ২০২৩ এ ভোট গ্রহন শুরু হয়।
নির্বাচনের ভোট গ্রহন চলাকালীন কেন্দ্রের ভিতরে সাদা জেজিস্ট্রারে প্রত্যেক ভোটারের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। তাদের এমন অনিয়মে আমরা সাধারণ ভোটারগন প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে শনিবার দুপুরে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে অভিযোগ করি। অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় উপজেলা সমবায় অফিস থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মোহাম্মদ সামছু উদ্দিনকে ফোন করলে ঘটনার সত্যতা পান। এসময় তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে ভোটারদের স্বাক্ষরিত ওই রেজিস্ট্রার জব্দ করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।
উপজেলা সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ সামছু উদ্দিন বলেন, নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রের বাহিরে সমিতির অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি আবদুল কাইউম সমিতির মিটিং দেখানোর জন্য ওই স্বাক্ষর নিয়েছেন। নির্বাচনী আচরণ বিধিতে এটি কতটুকু যৌক্তিক এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে ফোন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এই কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। তবে ওই রেজিস্ট্রার জব্দের বিষয়ে স্যার (ডিসি) আমাকে কোন নির্দেশনা দেননি।
গবাদিয়া বুড়াবুড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি আবদুল কাইউম ভোটারদের কাছ থেকে সাদা রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সমিতির কি আইন-কানুন সেটা তো নির্বাচন কমিশন ভালো জানেন। উপজেলা সমবায় অফিসের সহকারী পরিদর্শক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সামছু উদ্দিন সাহেবসহ কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ভোটারদের কাছ থেকে ওই রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর নিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, স্বাক্ষর নেওয়া রেজিস্ট্রার জব্দ করে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গবাদিয়া বুড়াবুড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়। সমিতির সদস্য সংখ্যা ৭৬০জন। সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রতি তিন বছর পর নির্বাচন হওয়ার রয়েছে। কিন্তু একটি চক্র ওই নির্বাচনকে সব সময় প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে অভিযোগ সমিতির সদস্যদের। ২০২৩ সালের এই নির্বাচনে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমে অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি স্বাক্ষর না করায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেননি। এতে সভাপতি পদের এক প্রার্থী উচ্চ আদালতে মামলা করার পর আদালতের রায়ে সভাপতি পদে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। ফলে শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।