জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত মঙ্গলবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নোয়াখালীসহ দেশের ৬১ জেলা পরিষদে আগামী ১৭ অক্টোবর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আলোচনায় ওঠে এসেছেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর নাম। আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে পেতে নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই জেলার বৃহৎ উন্নয়নের চালিকা ঘর হিসেবে নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী জেলার হেডকোয়ার্টার মাইজদী থেকেই চায় দলীয় নেতাকর্মীরা।
মূলত জেলা শহর মাইজদী থেকে নোয়াখালীর রাজনীতি পরিচালিত হওয়ায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদটি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের দাবি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এবারের নির্বাচনে তৃণমূল থেকে দলীয় হাইকমান্ড পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।
তবে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু ছাড়াও দলীয় মনোনয়নের লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন বর্তমান প্রশাসক ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ ও জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ডা.একেএম জাফর উল্যাহ। জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ডা.একেএম জাফর উল্যাহ গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছেন। তাই এবার দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর ক্ষুব্ধ রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের বৃহৎ অংশের নেতাকর্মীরা বলেন, আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করতে গিয়ে বহুবার গ্রেপ্তার, পুলিশি নির্যাতনের শিকার ও কারাবরণ করেছেন। ১৯৮১-৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াত কর্তৃক বারবার নির্যাতিত হয়েছেন। ২০০৭-০৮ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন পিন্টু। আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও নির্যাতিত এ নেতাকে দলের দূ:সময়ে রাজপথে স্বোচ্ছার দেখা গেছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকরা যে কোন দূ:সময়ে তাকে পাশে পেয়েছেন। কিন্তু দলের প্রতি তাঁর ত্যাগের কোন মূল্যায়ন এখন পর্যন্ত পাননি পিন্টু। নেতাকর্মীদের ভাষ্যমতে, কর্মীবান্ধব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুকে রাজনৈতিকভাবে এবার মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
দলীয় গ্রুপিংয়ের বিষয়ে নেতাকর্মীরা বলেন, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে গত দুই বছর নানা গ্রুপিং চলে আসছিল। গেল বছর জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের নেতা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যে আহবায়ক কমিটি অনুমোদ দিয়েছেন, সেই কমিটির প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতাদের সাথে সমন্বয় করে দলীয় সকল কর্মসূচিতে সক্রিয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানান দিয়ে নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ চলায় দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখাতে গিয়ে নিজে বঞ্চিত হয়েছি। তারপরও প্রিয় নেত্রী আমাদের আস্থার শেষ ঠিকানা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের প্রিয় নেতা নোয়াখালী গর্ব ওবায়দুল কাদের ভাইয়ের প্রতি আস্থা রেখে কাজ করেছি। জীবনের শেষ সময়ে এসে এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক মনোনয়ন চাইবো। দল মূল্যায়ন করলে জেলার স্থানীয় সরকারের অধীনস্থ জনপ্রতিনিধিদের বিপুল ভোটে নৌকার জয় সুনিশ্চিত করে দলকে উপহার দিবো।
এদিকে, বিএনপি থেকে নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী দেওয়া হবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।